নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে গ্রামীণ পর্যায়ের ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক ক্ষতির চিত্র উঠে এসেছে এক জরিপে। দুটি বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত ওই জরিপে বলা হয়েছে, সাধারণ ছুটি বা লকডাউনের পর থেকে ৮০ শতাংশ গ্রামীণ ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসা বা উদ্যোগ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। অন্যদিকে নানা কারণে সঙ্কট মোকাবিলা করে বাকি ২০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা ব্যবসা চালু রাখলেও পণ্য বিক্রির ‘সুযোগ পাচ্ছেন না’।
১০ জেলায় ৪০০ ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তার ওপর মে মাসের শেষ ১০ দিনে এই জরিপ পরিচালনা করেছে স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট (স্টেপস্) এবং জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা গ্যাড অ্যালায়েন্স। দুই সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জরিপে অংশগ্রহণকারী নারীদের ৭৬ শতাংশ জানিয়েছেন, বাজার থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করতে পারেননি। এ কারণে তাদের উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে যানবাহন বন্ধ থাকার কারণে ৪৬ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা অনেক কষ্টে চড়ামূল্যে বাজার থেকে কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করলেও এখন দুশ্চিন্তায় আছেন পণ্যের বাড়তি দাম পাওয়া নিয়ে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে তাদের নানা দায় মেটাতে স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়েছে। ফলে ঋণের জালে তারা জড়িয়ে পড়ছেন।
নারী উদ্যোক্তাদের এই বিপদাপন্ন অবস্থার কারণে তাদের ওপর নির্ভরশীল গ্রামীণ কর্মীরা আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়েছে বলে জানান তারা। ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে প্রণোদনার অংশ হিসেবে সরকারিভাবে সহজশর্তে ও বিনাসুদে ঋণ প্রদানের সুপারিশ করেছে জরিপ পরিচালনাকারী দুই সংস্থা।
একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে তারা যে ঋণ নিয়েছেন, তার সুদ ১০ মাসের জন্য মওকুফ করার সুপারিশ করে তারা বলছেন, গত মার্চ থেকে আগামী ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ঋণের সুদ মওকুফ করা হোক। ভবিষৎ ব্যবসা ও উদ্যোগগুলো পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ঋণপ্রদানকারী সংস্থা থেকে সঞ্চয় ফেরত পেতে আগ্রহী নারী উদ্যোক্তাদের সঞ্চয় ফেরত দিয়ে মূলধনের জোগান দেওয়ার সুপারিশও জরিপে করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল ও চট্টগ্রাম জেলায় পরিচালনা করা হয়েছিল এই জরিপ।